বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটিং প্লাটফর্ম হিসেবে পরিচিত ফেসবুক। সেই হিসেবেই বর্তমান সময়ে ফেসবুকের বিভিন্ন ব্যবসায়িক গ্রুপের মাধ্যমে অনেকে প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা ব্যাক্তিগত পণ্যের ব্যবসা করে আসছেন। যেখানে গ্রুপ থেকেই পণ্য বিক্রি করা হয়। এতে অনেকে সফলতা পায় আবার অনেকে পায় না। চলুন তবে যেনে নেয়া যাক কিভাবে ফেসবুক গ্রুপকে কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং করবেন ।

জেনে নিন কিভাবে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে আপনার পণ্যের বিক্রি করবেন:

নিয়মিত একটিভ থাকা: প্রথমেই আপনাকে ব্যবসায়িক গ্রুপে যুক্ত হয়ে বেশি বেশি একটিভ থাকতে হবে। একই সাথে অন্যজনের পোস্টগুলোতে গঠনমূলক কমেন্ট করতে হবে। যদি কোন পোস্ট কমেন্ট না করেন তবে আপনি একটিভ কিনা তা বোঝা যাবে না। প্রতিদিন নিয়মিত গঠনমূলক কমেন্ট করা উচিৎ। তবে আপনি সেলার বা বায়ার তা বোঝানোর কোন দরকার নাই। আপনার যদি কোন পণ্য থাকে তাহলে আপনি বিক্রি করবেন আর আরেকজনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনবেন।

গ্রুপের নিয়ম মেনে পোস্ট করা: প্রত্যেকটি গ্রুপেই কিছু নিয়ম রয়েছে। গ্রুপের এডমিন ও মডারেটররা আপনার আইডির ডিটেইল না পেলে বা ফেইক মনে করলে পোস্ট এপ্রুভ করবে না। আবার অনেক গ্রুপে পণ্যের বেশি ছবি দিলে এপ্রুভ করে না। সে হিসেবে গ্রুপের দেওয়া নিয়মগুলো মেনে পোস্ট করতে হবে। সব সময়ই চেষ্টা করবেন পণ্যের সঠিক বর্ণনা দিয়ে গ্রুপের নিয়ম মেনে পোস্ট করা। এতে সেল হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। একটা পোস্ট দিয়েই পরিচিতি বাড়লে তবে দুইদিন পর আবার গঠনমূলক পোস্ট করা।

গ্রুপের কর্তৃপক্ষদের ফ্রেন্ডলিস্টে রাখা: আপনি যে গ্রুপে পোস্ট করেন সেই গ্রুপের এডমিন বা মডারেটরদের নিজের ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিস্টে রাখা চেষ্টা করা। এতে তাদের সাথে আপনার পরিচিত থাকলে তারা সহজেই আপনার গঠনমূলক পোস্ট দেখে এপ্রুভ করবে। তবে তাদেরকে এ্যাড না করতে পারলে সেই গ্রুপে একটিভ মেম্বারদের যুক্ত করে রাখতে পারেন। এতে যদি বেশি পোস্ট করেন তবে আপনার পোস্ট রিচ বাড়বে।

সঠিক পণ্য নির্বাচন: যদি দেশী পণ্যের গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে অবশ্যই সেখানে আপনাকে দেশী পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে বিদেশী পণ্য হলে সেই ধরনের গ্রুপ খুঁজতে হবে। কারণ টার্গেট ছাড়া কখনই ভালো করা যাবে না। তাই গ্রুপ অনুসারে সেই পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। এক কথায় আপনি যে পণ্য নিয়ে কাজ করবেন সেই গ্রুপেই যুক্ত হতে হবে।

পণ্যের সুন্দর ছবি নির্বাচন: ফেসবুকে মার্কেটিং করতে হলে অবশ্যই আগে আপনার পণ্যের সুন্দর ছবি নির্বাচন করতে হবে। ছবিতে গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে পারলে আপনার পণ্য সেল বাড়বে। সে জন্য ভালো মোবাইল দিয়ে ছবি উঠানোর চেষ্টা করবেন। গ্রুপের অন্যদের পোস্ট দেখেও শিখতে পারেন তারা কেমন ছবি ব্যবহার করে। সুন্দর ছবি দিয়ে পোস্ট করলে বেশি রিচ আসবে। যার ফলে বেশি মানুষ দেখার ফলে ক্রেতাও বাড়বে।

পণ্য সম্পর্কে গঠনমূলক বর্ণনা: আপনি যে ধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করবেন সে বিষয়ে সুন্দর করে বর্ণনা দিয়ে পোস্ট দিবেন। পণ্য কিভাবে আসল বা কোথায় বানানো হয়েছে এবং পণ্যের কি কি গুণ ও উপকারিতা রয়েছে। এমনভাবে সাজিয়ে বর্ণনা দিতে হবে যা কেউ পড়লে পণ্যটির কেনার আগ্রহ বাড়ে।

গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অফার দেওয়া: গ্রাহকদের আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে অফার দিতে পারেন। যেমন ঈদ বা পূজা বা বছরের প্রথম ও শেষ দিকে আপনি একটা প্যাকেজ তৈরি করতে পারেন। যেখানে প্যাকেজের মধ্যে নির্দিষ্ট মূল্যের জন্য ছাড়ের ব্যবস্থা করলে ক্রেতার আগ্রহ বাড়বে। একই সাথে অফারগুলো অবশ্যই লোভনীয় হতে হবে। তবে অফার অনুসারে ক্রেতাকে দেওয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে।

নিজের আইডি পাবলিক ও পণ্য সম্পর্কে পোস্ট রাখা: আপনি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ব্যবসা করবেন তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের ফেইবুক আইডিটা লক রাখা যাবে না। লক থাকলে ক্রেতা আপনাকে বিশ্বাস করতে চাইবে না। আইডিটাকে পাবলিক রাখা এবং নিজের ছবি যুক্ত করা (মেয়ে হলে ছবি না দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে সঠিক তথ্য দিয়ে সুন্দর করে নিজের আইডির এবাউট গুছিয়ে রাখা) থাকলে তা আপনাকে বিশ্বস্ত করে তুলবে। একই সাথে আইডিতে নিজের পণ্যের ছবি দিয়ে পোস্ট রাখতে হবে। এতে ক্রেতারা আপনার আইডি ঘুরলে বুঝতে পারে আপনি ফেইক বিক্রেতা নয়। আইডির তথ্যগুলো সঠিকভাবে না থাকলে সাধারণত অনেকে আপনার সাথে সহজে কেউ লেনদেনে আসবে না।

এতে ক্রেতার সংখ্যা কম হতে পারে। যেহেতু এটা অনলাইন ব্যবসা তাই কেউ কাউকে চিনে না তাই নিজের আইডিতে পণ্যের ছবি সাথে গঠনমূলক তথ্য দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা উচিৎ।

Author: মো: সোহেল রানা (Content Writer Team Ready eShop)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here